শনিবার ● ১৭ মে ২০২৫ ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
×
Ad for sale 100 x 870 Position (1)
Position (1)
সারাদেশে বেড়েছে খুন, ছিনতাই ও ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলার নাজুক অবস্থা
প্রকাশ : শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি , ২০২৫, ১২:৪২:০০ পিএম , আপডেট : শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি , ২০২৫, ০১:০৭:৩৫ পিএম
সম্পাদক:
Desherdak_2025-01-03_67778bb5a6e3e.jpg

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বেড়েছে খুন, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা। এতে রীতিমতো বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। কোনোভাবেই পরিস্থিতি সামলাতে পারছেন না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন সড়কে ওঁৎ পেতে থাকা ছিনতাইকারীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে পথচারীদের ওপর আক্রমণ চালায় এবং সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অনেকে। এরা এতটাই বেপরোয়া যে, শুধু রাস্তাঘাটে নয় যাত্রীবাহী বাসে, কোনো কোনো সময় রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ধারালো অস্ত্রের মুখে টাকাণ্ডপয়সা, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিচ্ছে।

স্ত্রী ও চার সন্তানকে নিয়ে প্রাইভেট কারে ঢাকা থেকে গাজীপুরের শ্রীপুরে যাচ্ছিলেন ওষুধ ব্যবসায়ী হাসিবুল ইসলাম ওরফে বাদশা (৪০)। যানজটের কারণে শ্রীপুরে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছাতে তাঁদের রাত তিনটা বেজে যায়। তখন হাসিবুলের স্ত্রীকে ঘিরে ধরে ১৫ থেকে ২০ জনের কিশোর-তরুণদের একটি দল। একপর্যায়ে তারা স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে হাসিবুল বাধা দেন। তখন স্ত্রী-সন্তানদের সামনে হাসিবুলকে ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে তারা। স্বামীকে হারিয়ে স্ত্রী মাহমুদা আক্তার বলেন, ‘চাইরটা সন্তানের এখন কী হইব? চোখের সামনে মানুষটারে এইভাবে মাইরা ফালাইল।’

রাজধানীর খিলগাঁও ও যাত্রাবাড়ীতে ছিনতাইকারীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে দুই ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

গত বুধবার সন্ধ্যায় ও বৃহস্পতিবার সকালে পৃথক এই ঘটনা ঘটে। আহত দুজন হলেন মো. কাজল আহমেদ (৪৮) ও রাজন বর্মণ (১৭)।

র‌্যাব বলেছে, ৬ মাসে ৫৯টি অভিযান চালিয়ে ২০৪ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ অবস্থায় নগরবাসীকে চলাচলে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন এই বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা।

রাজধানী বা তার আশপাশ এলাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, রাহাজানির ব্যাপারটি নতুন কিছু নয়। তবে দীর্ঘদিন এই অরাজকতা থেকে নগরবাসী মুক্ত ছিল। বর্তমানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ নানা কারণে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে। গতকাল প্রতিদিনের সংবাদে প্রকাশিত ‘রাজধানীতে ছিনতাই বৃদ্ধি, সতর্ক থাকার পরামর্শ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ছেড়ে আসা যানবাহনগুলো ভোরের দিকে রাজধানীতে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়। বাস টার্মিনাল বা স্ট্যান্ড থেকে তারা নির্দিষ্ট গন্তব্য যাওয়ার পথে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হন। এছাড়া রাতে ও ভোরে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় চলাচলের সময় অনেকেই ছিনতাইয়ের শিকার হন। রাজধানীতে গোয়েন্দা পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। রাজধানীতে রাতে এবং বিশেষ করে ভোরের দিকে ছিনতাইয়ের ঘটনায় বেশ উদ্বিগ্ন ডিএমপির পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, মাঝ রাতে কিংবা ভোরের দিকের ঘটনাগুলো কমানোর জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে সব বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। সেই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট থানাগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী,শনির আখড়া, জাপানি বাজার, কদমতলী, জুরাইন, উত্তরা ও রাজধানীতে ঢোকার মুখগুলোয় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে রাজধানীতে রাতে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে এখন সহায়ক হিসেবে কাজ করছে অসাধু অটোরিকশাচালকরা। যা অপরাধকে আরো উসকে দিচ্ছে। রাতে যাত্রীদের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার সময় নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে মূল্যবান জিনিসপত্র ও টাকা পয়সা ছিনতাই করছে তারা।

শুক্রবার ভোরেও জাপানি বাজারের মুক্তধারা এলাকায় ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছেন এক ব্যাক্তি।

তবে বিবেচ্য বিষয় হচ্ছে, কেন হঠাৎ করে ছিনতাইচক্র এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে খতিয়ে দেখতে হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে হবে। কারণ পুলিশ জনগণের বন্ধু। সেহেতু সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় মূল দায়িত্ব তাদের ওপর অর্পিত। সেই বাস্তবতায় পুলিশকে আরো সক্রিয় হতে হবে। পাশাপাশি জনগণের আস্থায় পরিণত হতে পারে সেজন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। রাতে ঢাকা শহরজুড়ে পাহারা থাকে অথচ রাতেই তা অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। ব্যাপারটি কেন এবং কি কারণে ঘটছে বা ঘটতে পারছে অবশ্যই তা খতিয়ে দেখা দরকার। নাগরিক নিরাপত্তার বিবেচনা থেকে সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

আরও খবর

Ad for sale 225 x 270 Position (2)
Position (2)
Ad for sale 225 x 270 Position (3)
Position (3)
🔝